পারমাণবিক শোষণ বর্ণালিবিশ্লেষণ (Atomic Absorption, UV visible Spectroscopy)
নমুনার ধাতব আয়ন শনাক্তকরণে একটি বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হল পারমাণবিক বর্ণালি বিশ্লেষণ । বিভিন্ন ধরনের নমুনার ধাতব আয়ন শনাক্তকরণে এ পদ্ধতিটি ব্যবহৃত হয় । যেমন- পানি, রক্ত, মাটি এবং খাদ্য নমুনার ক্ষেত্রে । উদাহরণস্বরূপ রক্তরসে অ্যালুমিনিয়াম উদ্ভিদ, মাটির এবং পানির নমুনায় ক্যালসিয়াম, কপার-সংকরে কপার, সমুদ্রের পানিতে ক্রোমিয়াম, উদ্ভিদে লৌহ এই পদ্ধতি ppm রেঞ্জে শনাক্তকরণে খুবই কার্যকর । তবে পদ্ধতির উন্নয়ন সাপেক্ষে আরও সূক্ষ্ম লেভেলেও কার্যকর ।
পারমাণবিক শোষণের মূলনীতিঃ বোর পরমাণু মডেলের অন্যতম দু’টি স্বীকার্য হলো-
পরমাণুর ইলেকট্রনসমূহ নির্দিষ্ট শক্তির কতগুলো বৃত্তাকার স্থায়ী নিউক্লিয়াসের চতুর্দিকে আবর্তন করে । এ সকল কক্ষপথে আবর্তন কালে ইলেকট্রন কোন শক্তি শোষণ বা বিকিরণ করে না ।
তবে বহিরাগত উৎস থেকে শক্তি প্রয়োগ করা হলে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পরিক্রমণরত ইলেকট্রনগুলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি শোষণ করে উত্তেজিত হয়ে শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হয় । বহিরাগত শক্তির উৎস সরিয়ে নিলে উচ্চস্তরের উত্তেজিত ইলেকট্রনগুলো একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তি বিকিরণ করে নিম্নতর শক্তি স্তরে (অধিকতর স্থায়ী) ফিরে আসে । এভাবে ইলেকট্রনের এক শক্তিস্তর থেকে অন্য শক্তিস্তরে স্থানান্তরকালে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তির শোষণ অথবা বিকিরণই হলো পারমাণবিক বর্ণালির মূলনীতি ।
প্রত্যেক ধাতু বৈশিষ্ট্যমূলক তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বা কম্পাঙ্কের আলো শোষণ করে ।
অউত্তেজিত বাষ্পায়িত ধাতব পরমাণু বহিঃস্থ উৎস হতে বৈশিষ্ট্যমূলক কম্পাঙ্কের আলোক রশ্মি শোষণ করে উত্তেজিত হয় যা নিম্নশক্তির অবস্থা হতে উত্তেজিত অবস্থায় স্থানান্তর করে ।